গ্রিক পৌরাণিক গল্পে উল্লেখিত কাইমেরা বা ‘প্রেতাত্মা হাঙর’ একটি রহস্যময়, উদ্ভট বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন প্রাণী। জোড়াতালির শরীরের এমন জীব খুব কমই দেখা যায় বলেই এটি রহস্যময়।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘প্রেতাত্মা হাঙর’ শুধু পুরাণের পাতায়ই নয়, বাস্তবেও আছে। এর বিভিন্ন প্রজাতির ডাকনাম ৠাটফিস, ৠাবিটফিস বা স্পুকফিস, যেগুলো কাইমেরাদের উদ্ভট চেহারার ইঙ্গিত দেয়।
সমুদ্রের খুব গভীরে এদের বাস। চোখ ফ্যাকাশে হওয়ায় তাদেরকে মৃত বা প্রেতাত্মা প্রাণী বলে মনে হয়। যেখানে দাঁত থাকা উচিত, প্রেতাত্মা হাঙরের সেখানে নেই। আর দাঁতগুলো থেকে খাবারের প্লেট চূর্ণনের মতো শব্দ করে হাঙরগুলো।
তাদের মাথা পুরনো সেলাইয়ের অবশিষ্টাংশের দাগের মতো এবং রহস্যপূর্ণ বিন্দুর সঙ্গে রেখাযুক্ত হয়। পুরুষ কাইমেরাদের সঙ্কোচনশীল যৌনাঙ্গ থাকে কপালে।
মনটেরে বে অ্যাকোয়ারিয়াম রিসার্চ ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন যে, তারা প্রেতাত্মা হাঙরের একটি প্রজাতির ভিডিওচিত্র ধারণ করেছেন। সূচালো নাকের নীল কাইমেরা প্রজাতিটির ভিডিওটি আসলে ২০০৯ সালে গৃহীত হয়। কিন্তু সম্প্রতি ইনস্টিটিউটটির গবেষক লোননি লান্ডস্টেন ও তার সহকর্মীরা একটি গবেষণা প্রতিবেদনসহ সেটি প্রকাশ করেছেন।
সূচালো নাকের নীল কাইমেরা প্রজাতিটিকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও নিউ ক্যালেডোনিয়ার চারপাশে গভীর জলের মধ্যে ২০০২ সালে প্রথম আবিষ্কার করেন গবেষক ডমিনিক দিদি।
আর সাত বছর আগে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের কেন্দ্রীয় ক্যালিফোর্নিয়া ও হাওয়াইয়ের মাঝামাঝি অংশে ‘প্রেতাত্মা হাঙর’ কাইমেরাকে ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করেন গবেষকরা। সমুদ্রের ৬ হাজার ৭০০ ফুট গভীর থেকে তুলে আনা এ ভিডিওচিত্র দেখে মনটেরে বে অ্যাকোয়ারিয়াম রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষকরা আশাবাদী যে, তারা এ মাছটিকে ক্যালিফোর্নিয়া ছাড়াও অনেক গভীর সমুদ্রবন্দর থেকে পেতে পারেন। তখন তারা এর পাখনা ও শরীরের অন্যান্য অংশের বিস্তারিত পরিমাপ এবং তার টিস্যুর ডিএনএ বিশ্লেষণ ও সঞ্চালন করতে সক্ষম হবেন।